TORN CURTAIN (1966)-NARRATIVE বা আখ্যান পর্যালোচনা
স্যার অ্যালফ্রেড যোসেফ হিচকক (জন্মঃ আগস্ট ১৩, ১৮৯৯; মৃত্যুঃ এপ্রিল ২৯, ১৯৮০) একজন ইংরেজ চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক ছিলেন।যুক্তরাজ্যের চলচ্চিত্র ইন্ড্রাস্টিতে তিনি নির্বাক ও সবাক দুইধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণ করেই সাফল্য পেয়েছিলেন। তিনি ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে সাফল্য পাওয়ার পর ১৯৩৯ সালে তিনি ইংল্যান্ড থেকে হলিউডে চলে আসেন এবং তিনি ১৯৫৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভ করেন।
অ্যালফ্রেড হিচকক পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার দীর্ঘ পরিচালনা জীবনে নিজের জন্য পরিচালনার সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও জনপ্রিয় একটি ধারা তৈরি করেছেন যা এখন প্রায়শই 'হিচককিয়ান' নামে উল্লেখ করা হয়।উদ্বেগ, ভয়, কল্পনা অথবা সহানুভূতির অভিব্যক্তি বাড়িয়ে দিয়ে তিনি শটকে এমন ভাবে ফ্রেমবন্দি করতেন ও সম্পাদনা করতেন যা সম্পূর্ন ছবিকে এক অন্যন্য মাত্রায় উপস্থাপন করত।
TORN CURTAIN হল অ্যালফ্রেড হিচকক পরিচালিত ১৯৬৬ সালের একটি রঙিন চলচ্চিত্র।
এটি গুপ্তচর রোমাঞ্চকর ধারার চলচ্চিত্র।
এই চলচ্চিত্রটি এমন এক আমেরিকান বিজ্ঞানী সম্পর্কে, যিনি কোনও সূত্রের সমাধান পেতে এবং সেখান থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যাওয়ার গোপন মিশনের অংশ হিসাবে পূর্ব জার্মানির কাছে আয়রন কার্টেনের(The Iron
Curtain was initially a non-physical boundary dividing Europe into two separate areas from the end of World War II in 1945 until the end of the Cold War in 1991) পিছনে ত্রুটি দেখানোর ভান করে।
গল্পের প্রথমেই আমরা দেখতে পাব মাইকেল আর্মস্ট্রং নামে এক
আমেরিকান পদার্থবিজ্ঞানী এবং রকেট বিজ্ঞানী যিনি তার সহকারী এবং বাগদত্তা সারা শেরম্যান
কে সঙ্গে নিয়ে কোপেনহেগেন এ একটি সম্মেলনের জন্য যাচ্ছেন।
গল্প শুরুর ৬মিনিটের
মধ্যে আমাদের কাছে প্রথম উদ্বেগজনিত দৃশ্যটি ফুটে ওঠে একটি RADIOGRAM এর মাধ্যমে।
RADIOGRAM টিতে মাইকেল
আর্মস্ট্রং এর নাম থাকলেও তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন, এবং এটি তার নই বলে তিনি জানিয়ে দেন।
তারকিছু পরেই তিনি এই ব্যাপারটি নিয়ে খুব মনোযোগ সহকারে ভাবতে থাকেন।
এখানে আমাদের সন্দেহও হবে যে কেন তিনি তার নাম এর RADIOGRAM টি নিতে অস্বীকার
করলেন,এই গল্পের আখ্যানটি(NARRATIVE) খুঁজতে হলে আমাদের পরবর্তীতে
বিস্তারিত ভাবে আরও কিছু দৃশ্য(SHOT) এবং পর্যায়াক্রম(SEQUENCE)এর দিকে নজর দিতে হবে।
মাইকেল আর্মস্ট্রং RADIOGRAMটি তখন নিতে অস্বীকার করলেও পরে উনাকে RADIOGRAMটির উত্তর দিতে দেখা
যাই।
এই দৃশ্যে তিনি সেই ELMO BOOK STORE যেখান থেকে তিনি RADIOGRAM টি পেয়েছেন
সেখানে উত্তর দিচ্ছেন যে তিনি বার্তাটি পেয়েছেন।
এরপর মাইকেল আর্মস্ট্রং এর কিছু আচরণ সারা শেরম্যান
কে বিচলিত করে তোলে,নিম্নে তার কিছু দৃশ্য তুলে ধরা হল।
১।হোটেলের কর্মকর্তার সঙ্গে
তিনি কথা বলছেন
২। তিনি একটি বিমানের টিকিট
সংগ্রহ করছেন
৩।মাইকেল আর্মস্ট্রং বইটি নিয়ে কিছু পরেই আসছে বলে চলে গেলেন
৪।সারা শেরম্যান এর এ সব দেখে সন্দেহ হই
মাইকেল
আর্মস্ট্রং এর জন্য যে বইটি নিয়ে আসা হয়েছিলও সেখান থেকে তিনি কোন বার্তা পাবেণ যা ১০৭ নং পাতাই রয়েছে।
এই ভাবে তিনি একটি গোপন বার্তা পেলেণ।
যার অর্থ টা তিনি এই ভাবে ব্যাবহার করেছেন। CONTACT π IN CASE
পূর্বেই বলা হয়েছিল গোপন মিশনের অংশ হিসাবে পূর্ব জার্মানির কাছে আয়রন কার্টেনের পিছনে ত্রুটি দেখানোর ভান করে মাইকেল
আর্মস্ট্রং ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী সমীকরণগুলি তিনি জানতে ছেয়েছিলেন।
এরপর মাইকেল আর্মস্ট্রং তার সহকারী ও বাগদত্তাকে মিথ্যা কথার ছলে তাকে বাড়ি চলে যেতে বলে। কিন্তু সারা শেরম্যান
তাকে না ছেড়ে চুপিচুপি মাইকেল আর্মস্ট্রং কে অনুসরণ করা শুরু করেন।যার
ফলে বিমানেই দুজনের বাগবিতণ্ডা শুরু হই।
এরপর মাইকেল আর্মস্ট্রং তার গোপন সূত্রের খোঁজে এসে প্রথমেই বার্লিন এর সুরক্ষা কর্মকর্তাদের
মুখোমুখি হন।মাইকেল আর্মস্ট্রং কে বার্লিন এর সুরক্ষা কর্মকর্তারা প্রশ্ন করেন কেন তিনি সুরক্ষা
কর্মকর্তাদের আগে না বলে তার সহকারী এনেছেন, এদিকে মাইকেল
আর্মস্ট্রং এবং সারা শেরম্যান
কে সঙ্গে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হই।
জিজ্ঞাসাবাদএর
কিছু দৃশ্য
এরপর বিভিন্ন কারণে বার্লিন সরকার তাদের
সন্দেহর চোখে দেখতে থাকেন এবং যে চরিত্রটির মাধ্যমে আমরা গল্পের আখ্যানটি(NARATIVE)খুঁজে পেতে সাহায্য হবে উনি হলেন হারমান গ্রোমেক তিনি একজন বার্লিনের সুরক্ষা কর্মকর্তা।
হারমান গ্রোমেক
অবশেষ এ জিজ্ঞাসাবাদএর পর মাইকেল আর্মস্ট্রং এবং সারা শেরম্যান কে তারা একসঙ্গে থাকার অনুমতি দেই।কিন্তু দুজনের বাগবিতণ্ডা চলতেই থাকে। এবং সারা শেরম্যান ধীরে ধীরে বুজতে পারে
মাইকেল আর্মস্ট্রং এর আসল উদ্দেশ্য টা কি, এই জিজ্ঞাসাবাদ এর প্রসঙ্গে শেরম্যানকে আমেরিকান "গামা ফাইভ" অ্যান্টি-মিসাইল প্রোগ্রাম সম্পর্কে তার জ্ঞান
সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করার চেষ্টা করা হই, তবে তিনি সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে এবং আর্মস্ট্রং
গোপনে তার আসল উদ্দেশ্যগুলি তাকে জানায়।
"গামা ফাইভ" অ্যান্টি-মিসাইল প্রোগ্রাম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদএর কিছু
দৃশ্য
সারা শেরম্যান
কে বোঝানোর দৃশ্য
এরপর মাইকেল আর্মস্ট্রং বুজতে পারেন তিনি যেকোনো সময় ধরা পরতে পারেন তাই পুরনো বার্তা অনুসারে তিনি
একদিন সবার চোখের আড়ালে সাহায্যের জন্য বেরিয়ে পরেন, এখানে মাইকেল
আর্মস্ট্রং হারমান গ্রোমেক এর থেকে পালাতে অ্যালফ্রেড হিচকক শব্দের মাধ্যমে আমাদের মণে এক ভীতি
সঞ্চার করেছেন,যার কিছু দৃশ্য আমরা দেখবো,
মাইকেল
আর্মস্ট্রং সাহায্যের জন্য একটি গোপন ডেরাই আসেন,এবং মাইকেল আর্মস্ট্রং এর সুত্র ধরে হারমান গ্রোমেকও সেই গোপন ডেরাই আসেন।
সেই বই এ পাওয়া বার্তার প্রতিরূপ তিনি মাটিতে এঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে
তিনি সাহায্যের জন্য এসেছেন।
তাকে কৃষকের সঙ্গে দেখা করার কথা বলা হচ্ছে
কৃষকের সঙ্গে সাহায্যের জন্য কথা বলছেন
মাইকেল
আর্মস্ট্রং গ্রোমেক কে দেখে হকচকিয়ে ওঠেন
তিনি তাড়াতাড়ি ঘড়ে ঢুকছেন
অবশেষ এ গ্রোমেক এর চালাকিতে মাইকেল
আর্মস্ট্রং ধরা পরেন যে তিনি একজন আমেরিকান গোয়েন্দা,যার উদ্দেশ্য ছিল বার্লিন এর বিজ্ঞানি অধ্যাপক লিন্ড এর কাছে ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী সমীকরণগুলি
জানার।এরপর মাইকেল আর্মস্ট্রং হারমান গ্রোমেক কে সেখানে মেরে ফেলে পালান। যার দৃশ্য নিচে বর্ণিত হল।
তবে মাইকেল আর্মস্ট্রং ছলচাতুরী করে অধ্যাপক লিন্ড এর কাছে ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী সমীকরণগুলি জানার চেষ্টা করেন, এদিকে
সেই পুরনো ট্যাক্সিচালক হারমান গ্রোমেক এর খোঁজে খবরের কাগজে এক বিজ্ঞাপন
দেখেন,এবং সঙ্গে সঙ্গে উনি পুলিশে খবর দেন,
যেদিন গ্রোমেক কে হত্যা করা হয় ট্যাক্সিচালক দেখেছেন গ্রোমেক বাড়ীতে প্রবেশ
করছেন
১। ট্যাক্সিচালক খবরের কাগজ
পড়ছেন
২।GESUCHT WIRD এটি একটি
জার্মান শব্দ যার অর্থ-অনুসন্ধান করা হয়.
৩। ট্যাক্সিচালক সেদিনের ঘটনা
পুলিশ কে বলছেন
৪। ট্যাক্সিচালক পুলিশ কে বলছেন যে
গ্রোমেক কে তিনি সেই বাড়িতে যেতে দেখেছেন
৫। ট্যাক্সিচালক দেখছেন যে বাড়ি থেকে শুধু মাইকেল
আর্মস্ট্রং বেরলেন
৬।মাইকেল
আর্মস্ট্রং চলে যাওআর পরে গ্রোমেক এর মোটরসাইকেল
টি শুধু রয়েছে
উপরের ঘটনাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে এই গল্পের আখ্যানটি(NARRATIVE)টি ট্যাক্সিচালক এবং হারমান গ্রোমেক এর মাধ্যমে
প্রকাশ পাই,কেননা ট্যাক্সিচালক সেদিন গ্রোমেক কে না দেখলে মাইকেল
আর্মস্ট্রং এর ছলচাতুরী ধরা পড়তো না,এবং হারমান গ্রোমেকের বুদ্ধি সাহায্য করেছিল যে মাইকেল আর্মস্ট্রং একজন গোয়েন্দা।
গল্পের শেষার্ধে বার্লিন পুলিশ মাইকেল
আর্মস্ট্রং কে খোঁজার চেষ্টা করেন, কিন্তু মাইকেল আর্মস্ট্রং এর বুদ্ধিতে ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী সমীকরণগুলি জেনে তিনি বার্লিন থেকে জার্মানির মানুষের
সাজে সারা শেরম্যান কে সঙ্গে নিয়ে সুইডেন এ পালিয়ে যান। আমরা পরপর এবারে দেখে নেবো বিজ্ঞানি অধ্যাপক লিন্ড এর কাছে সমীকরণ জেনে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য।
জার্মানির মানুষের বেশে সারা শেরম্যান এবং মাইকেল
আর্মস্ট্রং
খুব নিখুঁত ভাবে মাইকেল আর্মস্ট্রং বিজ্ঞানি অধ্যাপক লিন্ড এর কাছে ক্ষেপণাস্ত্র বিরোধী সমীকরণগুলি দেখছেন
অবশেষে তারা একটি নাটকের দলের সহযোগিতাই সেখান থেকে সুইডেন যেতে সক্ষম হই
Full Movie You Tube Link-https://www.youtube.com/watch?v=3ARZ27eMXg0
Comments
Post a Comment